কেরে ভজু। ভেতর থেকে ইসলামভাই-এর গলা পেলাম।
অনিদা।
ভেতরে এলাম।
তুমি এতরাত পর্যন্ত কোথায় ছিলে।
কাজ করছিলাম।
বড়মা কতবার ফোন করলো জানো।
তুই কিছু বললিনা কেনো।
ইসলামদার সঙ্গে কথা হয়েছে।
তুই খেয়েছিস।
তুমি আসো নি খাবো কি করে।
বেশ করেছিস। পেটে ভিঁজে গামছা বেঁধে থাক।
ঘরে এলাম, দেখলাম ইসলামভাই আমার বিছানায় টান টান হয়ে শুয়ে আছে। আমায় দেখে হাসলো।
একটা চকচকে চাদর পাতা। ঘরটা মনে হয় আগের থেকে একটু চকচক করছে।
ঘরটার কি অবস্থা করেছিলি বলতো।
কতদিন আসিনি সেটা বলো।
তা ঠিক। কাজ হলো।
হ্যাঁ। আর একটা বড়ো কাজ বাকি আছে, কাল সকালে সারবো।
হাত মুখ ধুয়েনে তিনজনে বসে খাই।
এমা তুমি খেয়ে আসো নি।
তোর এখানে আসবো, খেয়ে আসবো কেনো। দিদিকে বললাম দিয়ে দাও, তিনজনে একসঙ্গে খেয়ে নেবো।
তুমি থাকবে না কেটে পরবে।
তুইতো থাকতে দিবি না।
আমি সে কথা বলিনি, তোমার ওখানে কি কাজ আছে না আছে আমি কি করে জানবো।
ওখানকার কাজ সাল্টে দিয়েছি। বাকি যে টুকু আছে রতন আবিদ করবে। লোক আছে।
আচ্ছা ইসলামভাই আমাকে একটা কথা বলতে পারো।
বল।
টোটাল ব্যাপারটার স্পনসর কে।
জেনে তোর লাভ।
না আমার কোনো লাভ নেই। তবু একবার জিজ্ঞাসা করা কর্তব্য তাই।
ইসলামভাই হো হো করে হেসে ফেললো।
তুই ব্যাটা বহুত ঘাঘু মাল। ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানিস না।
কিগো তুমি এখনো হাত মুখ ধোও নি। আমার খাবার গরম হয়ে গেছে। খিদে লেগেছে
তুই রান্নাঘরের খোঁজ পেলি কি করে!
এসে ঘর গোছালাম, ও বাড়ি থেকে আসার সময় দিদিমনি নতুন চাদর দিয়েছিলো পাতলাম।
ওই জন্য। তখন থেকে ভাবছি এ চাদর এলো কোথা থেকে। এতো চকচকে।
ওই ব্যাগে তোমার পাজামা পাঞ্জাবী আছে। পরে নাও।
তুই রেডি।
হ্যাঁ।
দাঁড়া আমি ঝট করে মুখ হাতপা ধুয়ে আসছি।
বাথরুমে গেলাম। তাড়াতাড়ি কাজ সারলাম। দেখি ইসলামভাই ছোটো টেবিলটা টেনে নিয়ে কাগজ পেতেছে।
কি এনেছিস ভজুরাম।
আলুপরটা মটর পণির আর চিকেন।
কিগো ইসলামভাই মেনুটা মনে হচ্ছে মিত্রার সিলেকসন।
ইসলামভাই হাঁসছে।
ও বাড়ির লেটেস্ট খবরা খবর নিতে নিতে খাওয়া শুরু করলাম।
ইসলামভাই বললো তুই ফোনের স্যুইচ অফ করে রেখেছিস। মামনি ফোন করেছিলো, আমি কতোবার ফোন করেছি। আবার টেনসনে পরে গেছিলো সবাই। কেনো তুই এরকম করিস?
আমি হাসছি।
একটু বললে যেখানে সব ঝামেলা মিটে যায়, সেখানে চেপে রাখার কি দরকার।
আমি শুনে যাচ্ছি।
অনিমেষদা বিধানদার সঙ্গে আমি দামিনী কাল একঝলক কথা বলেছি।
কি বললো।
দামিনীকে ওখানকার দায়িত্ব নিতে বলছে।
মাসি কি বলছে।
তোর সঙ্গে কথা বলে জানাবে।
অনিমেষদা কি বললো।
হাসছে। বিধানদাকে টিপ্পনি কেটে বললো, বিধানবাবু অনি এখন বড়ো নেতা।
ঠিকঠাক খাইয়েছো তো।
সাদা ভাত মুড়িঘন্টের ডাল মাছ সামান্য দই মিষ্টি খেয়েছে দুজনে। খুব ভালো মুডে ছিলো।
অনিদা।
ভেতরে এলাম।
তুমি এতরাত পর্যন্ত কোথায় ছিলে।
কাজ করছিলাম।
বড়মা কতবার ফোন করলো জানো।
তুই কিছু বললিনা কেনো।
ইসলামদার সঙ্গে কথা হয়েছে।
তুই খেয়েছিস।
তুমি আসো নি খাবো কি করে।
বেশ করেছিস। পেটে ভিঁজে গামছা বেঁধে থাক।
ঘরে এলাম, দেখলাম ইসলামভাই আমার বিছানায় টান টান হয়ে শুয়ে আছে। আমায় দেখে হাসলো।
একটা চকচকে চাদর পাতা। ঘরটা মনে হয় আগের থেকে একটু চকচক করছে।
ঘরটার কি অবস্থা করেছিলি বলতো।
কতদিন আসিনি সেটা বলো।
তা ঠিক। কাজ হলো।
হ্যাঁ। আর একটা বড়ো কাজ বাকি আছে, কাল সকালে সারবো।
হাত মুখ ধুয়েনে তিনজনে বসে খাই।
এমা তুমি খেয়ে আসো নি।
তোর এখানে আসবো, খেয়ে আসবো কেনো। দিদিকে বললাম দিয়ে দাও, তিনজনে একসঙ্গে খেয়ে নেবো।
তুমি থাকবে না কেটে পরবে।
তুইতো থাকতে দিবি না।
আমি সে কথা বলিনি, তোমার ওখানে কি কাজ আছে না আছে আমি কি করে জানবো।
ওখানকার কাজ সাল্টে দিয়েছি। বাকি যে টুকু আছে রতন আবিদ করবে। লোক আছে।
আচ্ছা ইসলামভাই আমাকে একটা কথা বলতে পারো।
বল।
টোটাল ব্যাপারটার স্পনসর কে।
জেনে তোর লাভ।
না আমার কোনো লাভ নেই। তবু একবার জিজ্ঞাসা করা কর্তব্য তাই।
ইসলামভাই হো হো করে হেসে ফেললো।
তুই ব্যাটা বহুত ঘাঘু মাল। ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানিস না।
কিগো তুমি এখনো হাত মুখ ধোও নি। আমার খাবার গরম হয়ে গেছে। খিদে লেগেছে
তুই রান্নাঘরের খোঁজ পেলি কি করে!
এসে ঘর গোছালাম, ও বাড়ি থেকে আসার সময় দিদিমনি নতুন চাদর দিয়েছিলো পাতলাম।
ওই জন্য। তখন থেকে ভাবছি এ চাদর এলো কোথা থেকে। এতো চকচকে।
ওই ব্যাগে তোমার পাজামা পাঞ্জাবী আছে। পরে নাও।
তুই রেডি।
হ্যাঁ।
দাঁড়া আমি ঝট করে মুখ হাতপা ধুয়ে আসছি।
বাথরুমে গেলাম। তাড়াতাড়ি কাজ সারলাম। দেখি ইসলামভাই ছোটো টেবিলটা টেনে নিয়ে কাগজ পেতেছে।
কি এনেছিস ভজুরাম।
আলুপরটা মটর পণির আর চিকেন।
কিগো ইসলামভাই মেনুটা মনে হচ্ছে মিত্রার সিলেকসন।
ইসলামভাই হাঁসছে।
ও বাড়ির লেটেস্ট খবরা খবর নিতে নিতে খাওয়া শুরু করলাম।
ইসলামভাই বললো তুই ফোনের স্যুইচ অফ করে রেখেছিস। মামনি ফোন করেছিলো, আমি কতোবার ফোন করেছি। আবার টেনসনে পরে গেছিলো সবাই। কেনো তুই এরকম করিস?
আমি হাসছি।
একটু বললে যেখানে সব ঝামেলা মিটে যায়, সেখানে চেপে রাখার কি দরকার।
আমি শুনে যাচ্ছি।
অনিমেষদা বিধানদার সঙ্গে আমি দামিনী কাল একঝলক কথা বলেছি।
কি বললো।
দামিনীকে ওখানকার দায়িত্ব নিতে বলছে।
মাসি কি বলছে।
তোর সঙ্গে কথা বলে জানাবে।
অনিমেষদা কি বললো।
হাসছে। বিধানদাকে টিপ্পনি কেটে বললো, বিধানবাবু অনি এখন বড়ো নেতা।
ঠিকঠাক খাইয়েছো তো।
সাদা ভাত মুড়িঘন্টের ডাল মাছ সামান্য দই মিষ্টি খেয়েছে দুজনে। খুব ভালো মুডে ছিলো।
ওদিককার ব্যাপারে তোমায় কিছু বললো।
গ্রীণ সিগন্যাল দিয়েছে। এবার আমাকে কাজের কাজ করতে হবে।
কি চিন্তা ভাবনা করলে।
কালকের কাজটা মিটুক।
কতোজনের এ্যারেঞ্জমেন্ট।
দাদা বললো অনি একটা পাগল বুঝেছো ইসলাম। কাকে কাকে বলবে আমি নিজেও জানিনা। তুমি বরং তিনশো দনের কথা মাথায় রেখে ব্যবস্থা করো।
হাসলাম।
আমি এর মধ্যে মাথা গলাবো না।
সে বললে হয়।
খাবার গুলো বেশ ভালো বানিয়েছে বুঝলে ইসলামভাই।
আমি জাকিরকে বলেছি একবারে রিচ করবি না। একবারে ঘরোয়া। ব্যাটা আমার কথাটা রেখেছে।
কালকের মেনু।
বলাযাবে না।
সেকিগো! বিয়ে আমার, মেনু জানতে চাইছি বলছো কিনা বলা যাবে না।
ইসলামভাই হাসে।
ইসলামভাই-এর ফোনটা বেজে উঠলো। নামটা দেখে বললো, মামনি।
কিরে মামনি।
বুবুন এসেছে।
হ্যাঁ তিনজনে বসে খাচ্ছি। তোকে খাওয়া হয়ে গেলে ফোন করতাম।
কখন এসেছে।
সাড়ে এগারোটা নাগাদ।
ওর ফোন বন্ধ কেনো।
যাঃ আমার ফোন খোলা আছে।
পকেট থেকে বার করে একবার দেখে না।
ভজু দেখতো।
অনিদা ঠ্যাংটা একটু রেখো।
কিরে তোর ঠ্যাং ও খাচ্ছে।
তাহলে কি।
ওরে সকাল থেকে ওর মুখ বন্ধ নেই, শরীর খারাপ করবে। ডাক্তারদাদা সকালে একবার ওকে বকেছে।
নাগো অনিদা দিদিমনি মিছে কথা বলছে।
আমি ভজুর দিকে তাকালম।
তোমার ফোন বন্ধ।
কিরে, দেখলি।
তুই কোথায়।
বড়মার ঘরে শুয়ে আছি।
কেনো ?
তোর ঘরে সব মেয়েরা।
মেয়েরা মানে।
অদিতি সুরো বাড়ি যায় নি। ফেল সবাই ও ঘরে।
তাই।
ছোটমার ঘরে দাদা মল্লিকদা। আগামীকাল আরো লোক আসবে ডাক্তারদাদার বাড়িতে শোবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কেনো ?
কোনো আবার কিরে এতো লোক শোবে কোথায় ?
দেখ আমি কিছুই জানি না।
তোর সব বড় বড় ব্যাপর।
এই রিটার্নটা কাল পাবি।
সরি সরি আর বলবো না।
তোর কাছে আর কে শোবে ?
ছোটমা বড়মা।
ওঘরে।
গ্রীণ সিগন্যাল দিয়েছে। এবার আমাকে কাজের কাজ করতে হবে।
কি চিন্তা ভাবনা করলে।
কালকের কাজটা মিটুক।
কতোজনের এ্যারেঞ্জমেন্ট।
দাদা বললো অনি একটা পাগল বুঝেছো ইসলাম। কাকে কাকে বলবে আমি নিজেও জানিনা। তুমি বরং তিনশো দনের কথা মাথায় রেখে ব্যবস্থা করো।
হাসলাম।
আমি এর মধ্যে মাথা গলাবো না।
সে বললে হয়।
খাবার গুলো বেশ ভালো বানিয়েছে বুঝলে ইসলামভাই।
আমি জাকিরকে বলেছি একবারে রিচ করবি না। একবারে ঘরোয়া। ব্যাটা আমার কথাটা রেখেছে।
কালকের মেনু।
বলাযাবে না।
সেকিগো! বিয়ে আমার, মেনু জানতে চাইছি বলছো কিনা বলা যাবে না।
ইসলামভাই হাসে।
ইসলামভাই-এর ফোনটা বেজে উঠলো। নামটা দেখে বললো, মামনি।
কিরে মামনি।
বুবুন এসেছে।
হ্যাঁ তিনজনে বসে খাচ্ছি। তোকে খাওয়া হয়ে গেলে ফোন করতাম।
কখন এসেছে।
সাড়ে এগারোটা নাগাদ।
ওর ফোন বন্ধ কেনো।
যাঃ আমার ফোন খোলা আছে।
পকেট থেকে বার করে একবার দেখে না।
ভজু দেখতো।
অনিদা ঠ্যাংটা একটু রেখো।
কিরে তোর ঠ্যাং ও খাচ্ছে।
তাহলে কি।
ওরে সকাল থেকে ওর মুখ বন্ধ নেই, শরীর খারাপ করবে। ডাক্তারদাদা সকালে একবার ওকে বকেছে।
নাগো অনিদা দিদিমনি মিছে কথা বলছে।
আমি ভজুর দিকে তাকালম।
তোমার ফোন বন্ধ।
কিরে, দেখলি।
তুই কোথায়।
বড়মার ঘরে শুয়ে আছি।
কেনো ?
তোর ঘরে সব মেয়েরা।
মেয়েরা মানে।
অদিতি সুরো বাড়ি যায় নি। ফেল সবাই ও ঘরে।
তাই।
ছোটমার ঘরে দাদা মল্লিকদা। আগামীকাল আরো লোক আসবে ডাক্তারদাদার বাড়িতে শোবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কেনো ?
কোনো আবার কিরে এতো লোক শোবে কোথায় ?
দেখ আমি কিছুই জানি না।
তোর সব বড় বড় ব্যাপর।
এই রিটার্নটা কাল পাবি।
সরি সরি আর বলবো না।
তোর কাছে আর কে শোবে ?
ছোটমা বড়মা।
ওঘরে।
মাসি কবিতা। ইসলামভাই প্রচুর জিনিসপত্র ঢুকিয়ে গেছে।
মামনি ওরা বার করে নি।
কোথায় রাখবে, তুমি কিছু বলোনিতো।
আমি রতনকে ফোন করছি।
এখন আর তোমায় ফোন করতে হবে না। সারাদিন পরে সবে দুজনে একটু শুয়েছে।
বুবুন।
উঁ।
তুই কখন আসছিস।
দেখি।
দেখি কেনো, ইসলামভাই-এর সঙ্গে চলে আসবি।
ঠিক আছে, এখন রাখ।
খাওয়া শেষ ?
না শেষের পথে।
মিত্রা ফোন বন্ধ করলো। খাওয়া শেষ হতেই, বেশ ঘুম পাচ্ছে। ইসলামভাইকে বললাম, আমি এই সাইডে তুমি ওই সাইডে। ভজুরাম মাঝখানে।
ইসলামভাই বললো তাই হোক।
ভজুরামকে বললাম মাথাটা একটু কড়কে দে।
ঠিক বলেছো অনিদা তোমার মাথাটা অনেকদিন ভালো করে টেপা হয় নি।
ভজুরাম সব গুছিয়ে গাছিয়ে নিলো। আমি বিছানায় টান টান হয়ে শুলাম।
ইসলামভাই কাল কিন্তু আমি অনেক ভোর ভোর বেড়িয়ে যাবো। তুমি জাগলে ভালো, না হলে ডাকবো না। মনে রেখো।
কাল আবার কোথায় যাবি ?
বলা যাবে না।
অন্যদিন করলে হতো না।
না।
আমায় জিজ্ঞাসা করলে কি জবাব দেবো।
বলবে সকালে উঠে চলে গেছে, দেখা হয়নি।
কখন আসবি।
বলতে পারছিনা।
তারমানে।
কাজটা শেষ করে আসতে হবে।
কালকেই করতে হবে।
ভেবেছিলাম তোমাকে বলবো না। তোমরা কেউ জানতেই পারবে না, আমি কখন গেছি। খালি তখন কথায় কথায় বললে একটু বললে যদি ঝামেলা কমে তাহলে বলবিনা কেনো তাই হিন্টস দিলাম।
ফোনটা অন্ততঃ পক্ষে খোলা রাখিস।
হয়তো হবে না।
দুপুরে এসে খাবিতো।
চেষ্টা করবো।
আবার কোনো গন্ডগোল পাকাচ্ছিস।
না।
ঠিক।
তুমি বিশ্বাস করতে পারো।
ভজুরাম মাথাটা বেশ ভালো ম্যাসাজ করে। এমনভাবে টেপে মাথাটা একেবারে হাল্কা হয়ে যায়। কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি জানি না। ঠিক সময়ে ঘুম ভেঙে গেলো। উঠে দেখলাম ওরা দুজনে অঘোরে ঘুমোচ্ছে। আমি মুখ হাত ধুয়ে ফ্রেস হলাম। জামা প্যান্ট পরলাম। আলমাড়ি থেকে জাঙ্গিয়া বার করে পরতে ভুললাম না। ফ্ল্যাটের চাবিটা দেখে নিলাম টেবিলের ওপর আছে কিনা। মোবাইলের ঘরিতে দেখলাম, পৌনে পাঁচটা বাজে। বাইরে হাল্কা আলো। আমি বেরিয়ে এলাম। দরজা দাঁড়িয়ে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম আজকের কাজটা আমার জীবনের একটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ আমাকে এই কাজটা ঠিক মতো শেষ করতেই হবে।
দরজাটা ভেজিয়ে বেরিয়ে এলাম। বাইরে এসে লক করে দিলাম। সোজা নিচে নেমে এলাম। এখনো ঠিক ঠিক আলো ফোটে নি। রাস্তার নিওন আলো গুলো সমান তেজে জ্বলছে। গেটের মুখে সেই ছেলেটি। ঝিমোচ্ছে। ওর গায়ে হাত দিয়ে ডাকলাম। চমকে উঠে পরলো।
মামনি ওরা বার করে নি।
কোথায় রাখবে, তুমি কিছু বলোনিতো।
আমি রতনকে ফোন করছি।
এখন আর তোমায় ফোন করতে হবে না। সারাদিন পরে সবে দুজনে একটু শুয়েছে।
বুবুন।
উঁ।
তুই কখন আসছিস।
দেখি।
দেখি কেনো, ইসলামভাই-এর সঙ্গে চলে আসবি।
ঠিক আছে, এখন রাখ।
খাওয়া শেষ ?
না শেষের পথে।
মিত্রা ফোন বন্ধ করলো। খাওয়া শেষ হতেই, বেশ ঘুম পাচ্ছে। ইসলামভাইকে বললাম, আমি এই সাইডে তুমি ওই সাইডে। ভজুরাম মাঝখানে।
ইসলামভাই বললো তাই হোক।
ভজুরামকে বললাম মাথাটা একটু কড়কে দে।
ঠিক বলেছো অনিদা তোমার মাথাটা অনেকদিন ভালো করে টেপা হয় নি।
ভজুরাম সব গুছিয়ে গাছিয়ে নিলো। আমি বিছানায় টান টান হয়ে শুলাম।
ইসলামভাই কাল কিন্তু আমি অনেক ভোর ভোর বেড়িয়ে যাবো। তুমি জাগলে ভালো, না হলে ডাকবো না। মনে রেখো।
কাল আবার কোথায় যাবি ?
বলা যাবে না।
অন্যদিন করলে হতো না।
না।
আমায় জিজ্ঞাসা করলে কি জবাব দেবো।
বলবে সকালে উঠে চলে গেছে, দেখা হয়নি।
কখন আসবি।
বলতে পারছিনা।
তারমানে।
কাজটা শেষ করে আসতে হবে।
কালকেই করতে হবে।
ভেবেছিলাম তোমাকে বলবো না। তোমরা কেউ জানতেই পারবে না, আমি কখন গেছি। খালি তখন কথায় কথায় বললে একটু বললে যদি ঝামেলা কমে তাহলে বলবিনা কেনো তাই হিন্টস দিলাম।
ফোনটা অন্ততঃ পক্ষে খোলা রাখিস।
হয়তো হবে না।
দুপুরে এসে খাবিতো।
চেষ্টা করবো।
আবার কোনো গন্ডগোল পাকাচ্ছিস।
না।
ঠিক।
তুমি বিশ্বাস করতে পারো।
ভজুরাম মাথাটা বেশ ভালো ম্যাসাজ করে। এমনভাবে টেপে মাথাটা একেবারে হাল্কা হয়ে যায়। কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি জানি না। ঠিক সময়ে ঘুম ভেঙে গেলো। উঠে দেখলাম ওরা দুজনে অঘোরে ঘুমোচ্ছে। আমি মুখ হাত ধুয়ে ফ্রেস হলাম। জামা প্যান্ট পরলাম। আলমাড়ি থেকে জাঙ্গিয়া বার করে পরতে ভুললাম না। ফ্ল্যাটের চাবিটা দেখে নিলাম টেবিলের ওপর আছে কিনা। মোবাইলের ঘরিতে দেখলাম, পৌনে পাঁচটা বাজে। বাইরে হাল্কা আলো। আমি বেরিয়ে এলাম। দরজা দাঁড়িয়ে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম আজকের কাজটা আমার জীবনের একটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ আমাকে এই কাজটা ঠিক মতো শেষ করতেই হবে।
দরজাটা ভেজিয়ে বেরিয়ে এলাম। বাইরে এসে লক করে দিলাম। সোজা নিচে নেমে এলাম। এখনো ঠিক ঠিক আলো ফোটে নি। রাস্তার নিওন আলো গুলো সমান তেজে জ্বলছে। গেটের মুখে সেই ছেলেটি। ঝিমোচ্ছে। ওর গায়ে হাত দিয়ে ডাকলাম। চমকে উঠে পরলো।
দাদা আপনি! এত সকালে ?
একটু বেরোবো দরজাটা একবার খুলে দাও।
ছেলেটি চাবি নিয়ে এসে দরজা খুললো। আমি বেরিয়ে এলাম। হাঁটতে হাঁটতে সোজা চলে এলাম গড়িয়াহাট। সকালে সবাই মর্নিং ওয়াক করতে বেরিয়েছে। মোটা মোটা থল থলে চেহারার মানুষ। সব বয়সের। কেউ কেউ আবার গোল পার্কের দিকে হেঁটে যাচ্ছে। হয়তো লেকে ঢুকবে। সকাল হতে না হতে কতো লোকের কতো কাজ। আমি যেমন চলেছি মানুষ খুঁজতে। নিজের মনে নিজে হাসলাম। একটু জোরে হেসে ফেলেছি। একবার পেছন ফিরে দেখলাম। না আমার আশে পাশে কেউ নেই।
চায়ের দোকনটার সামনে দাঁড়ালাম। এককালে রোজ এখানে চা খেতাম। এখন খাই না। তাই আমাকে চেনার বালাই নেই। জলের মগটা নিয়ে ঢক ঢক করে কিছুটা জল খেলাম। তারপর একভাঁড় চা একটা বিস্কুট সহযোগে মারলাম। বাড়িতে থাকলে একটু আতিথেয়তা পেতাম, এখানে তার বালাই নেই। পয়সা ফেঁকো তামাসা দেখো। ভাঁড়টা সঠিক জায়গায় ফেলে একটা সিগারেট কিনলাম। কালকের কেনা বেশ কয়েকটা ক্যান্ডি পকেটে পরে আছে। সিগারেট ধরালাম। এতো সকালে কোনোদিন সিগারেট খাই না। গলায় লাগলো খক খক করে কেশে উঠলাম। দুর শালা বলে সিগারেটটা ছুঁড়ে ফেলদিলাম।
আবার হাঁটতে শুরু করলাম। দেশোপ্রিয়ের মুখে এসে বাস ধোরলাম। কন্ডাকটর টিকিট চাইলো। বললাম ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি। কলকাতায় বিখ্যাত কালীবাড়ি গুলোর একটা। আমাদের কলেজের সামনে। বরতে গেলে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। মিত্রা আমি দু’একবার এখানে এসেছি। পূজোও দিয়েছি। ঘন্টাখানেক লাগলো এখানে আসতে। বাস থেকে নামলাম বিশেষ ভিড় নেই। মন্দিরে ঢুকে প্রণাম করলাম। আমার খুব একটা ধর্মে মতি নেই। তবু মনকে প্রশ্ন করলাম আজ এলাম কেনো ? উত্তর পেলাম না। যেটুকু আচার ধর্ম পালন করার দরকার, তাই করলাম।
তিনটে প্যাকেটে পূজো দিলাম একটা মিত্রা আমার নামে, একটা বড়মা দাদার নামে আর একটা ছোটমা মল্লিকদার নামে। ব্রাহ্মণ মশাই গোত্র জিজ্ঞাসা করলেন বলতে পারলাম না। পূজোর প্রসাদী আমার হাতে দিলেন। আমি নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম।
ঠিক পাশেই বীণা সিনেমা। হলের নীচের সিঁড়িতে একটু বসলাম। হুড় মুড় করে কতো কথা মনে পরে যাচ্ছে। নিজের মনেই হেসে বললাম, থামনা বাপু। অনেক হয়েছে। আর ভালো লাগছে না। তবু চোখের সামনে মিত্রা আমার হাত ধরে বুকে রেখেছে বোঝার পর আমার হাত সরিয়ে নেওয়ার স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠলো। মনে মনে হাসলাম। দূর, উঠে পরলাম। আমার চেনা রাজপথ। আমার কলেজ জীবন কেটেছে এই রাজপথে। অলিতে গলিতে কত স্মৃতি আঁকি বুকি কাটা হয়ে রয়েছে।
সোজা কলেজ পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে শ্যামবাজার চলে এলাম। গোলবাড়ির বড়ো ঘরিতে দেখলাম সোয়া সাতটা বাজে। এতোক্ষণে বাড়িতে হুলুস্থূলুস কান্ড বেঁধে গেছে। ইসলামভাই-এর সাপ-সাপান্তর চলছে। শ্যামবাজার বাটার সামনে এসে কিছুক্ষণ দাঁড়ালাম। এই প্রথম আমি মনে হয় ঈশ্বরের শ্মরণাপন্ন হচ্ছি। চোখ বন্ধ করতেই ঠনঠনিয়া কালীমার মুখটা ভেসে উঠলো। মনে মনে বললাম আজ আমি যেখানে যাচ্ছি, আমাকে সেখানে জিততেই হবে। তুমি আমার সঙ্গে থেকো। মায়ের হাসি হাসি মুখটা চোখের সামনে ভেসে এলো।
যেনো মনে হচ্ছে ভেতরে ভেতরে বল পাচ্ছি। কেনো এমন হচ্ছে ? এটাতো হওয়ার কথা নয়। এর আগে বহু সমস্যা সঙ্কুল কাজ আমি করেছি। তখনতো এমন মনে হয় নি। তাহলে আজ কেনো হচ্ছে ? পায়ে পায়ে হাঁটতে শুরু করলাম।
গলি পথ পেরিয়ে সেই বাড়িটার সামনে এসে দাঁড়ালাম। না এখনো সেই রকম আছে। গত দশ বছরে তার কোনো পরিবর্তন হয় নি। হয়তো পলেস্তরা খসিয়ে দেয়ালে নতুন পলেস্তরা পরেছে। সেই দরজা। কড়াদুটোও সেই রকম। আমি আস্তে করে কড়া নারলাম। একবার দুবার তিনবার। দরজা খুলে গেলো।
একটু বেরোবো দরজাটা একবার খুলে দাও।
ছেলেটি চাবি নিয়ে এসে দরজা খুললো। আমি বেরিয়ে এলাম। হাঁটতে হাঁটতে সোজা চলে এলাম গড়িয়াহাট। সকালে সবাই মর্নিং ওয়াক করতে বেরিয়েছে। মোটা মোটা থল থলে চেহারার মানুষ। সব বয়সের। কেউ কেউ আবার গোল পার্কের দিকে হেঁটে যাচ্ছে। হয়তো লেকে ঢুকবে। সকাল হতে না হতে কতো লোকের কতো কাজ। আমি যেমন চলেছি মানুষ খুঁজতে। নিজের মনে নিজে হাসলাম। একটু জোরে হেসে ফেলেছি। একবার পেছন ফিরে দেখলাম। না আমার আশে পাশে কেউ নেই।
চায়ের দোকনটার সামনে দাঁড়ালাম। এককালে রোজ এখানে চা খেতাম। এখন খাই না। তাই আমাকে চেনার বালাই নেই। জলের মগটা নিয়ে ঢক ঢক করে কিছুটা জল খেলাম। তারপর একভাঁড় চা একটা বিস্কুট সহযোগে মারলাম। বাড়িতে থাকলে একটু আতিথেয়তা পেতাম, এখানে তার বালাই নেই। পয়সা ফেঁকো তামাসা দেখো। ভাঁড়টা সঠিক জায়গায় ফেলে একটা সিগারেট কিনলাম। কালকের কেনা বেশ কয়েকটা ক্যান্ডি পকেটে পরে আছে। সিগারেট ধরালাম। এতো সকালে কোনোদিন সিগারেট খাই না। গলায় লাগলো খক খক করে কেশে উঠলাম। দুর শালা বলে সিগারেটটা ছুঁড়ে ফেলদিলাম।
আবার হাঁটতে শুরু করলাম। দেশোপ্রিয়ের মুখে এসে বাস ধোরলাম। কন্ডাকটর টিকিট চাইলো। বললাম ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি। কলকাতায় বিখ্যাত কালীবাড়ি গুলোর একটা। আমাদের কলেজের সামনে। বরতে গেলে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। মিত্রা আমি দু’একবার এখানে এসেছি। পূজোও দিয়েছি। ঘন্টাখানেক লাগলো এখানে আসতে। বাস থেকে নামলাম বিশেষ ভিড় নেই। মন্দিরে ঢুকে প্রণাম করলাম। আমার খুব একটা ধর্মে মতি নেই। তবু মনকে প্রশ্ন করলাম আজ এলাম কেনো ? উত্তর পেলাম না। যেটুকু আচার ধর্ম পালন করার দরকার, তাই করলাম।
তিনটে প্যাকেটে পূজো দিলাম একটা মিত্রা আমার নামে, একটা বড়মা দাদার নামে আর একটা ছোটমা মল্লিকদার নামে। ব্রাহ্মণ মশাই গোত্র জিজ্ঞাসা করলেন বলতে পারলাম না। পূজোর প্রসাদী আমার হাতে দিলেন। আমি নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম।
ঠিক পাশেই বীণা সিনেমা। হলের নীচের সিঁড়িতে একটু বসলাম। হুড় মুড় করে কতো কথা মনে পরে যাচ্ছে। নিজের মনেই হেসে বললাম, থামনা বাপু। অনেক হয়েছে। আর ভালো লাগছে না। তবু চোখের সামনে মিত্রা আমার হাত ধরে বুকে রেখেছে বোঝার পর আমার হাত সরিয়ে নেওয়ার স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠলো। মনে মনে হাসলাম। দূর, উঠে পরলাম। আমার চেনা রাজপথ। আমার কলেজ জীবন কেটেছে এই রাজপথে। অলিতে গলিতে কত স্মৃতি আঁকি বুকি কাটা হয়ে রয়েছে।
সোজা কলেজ পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে শ্যামবাজার চলে এলাম। গোলবাড়ির বড়ো ঘরিতে দেখলাম সোয়া সাতটা বাজে। এতোক্ষণে বাড়িতে হুলুস্থূলুস কান্ড বেঁধে গেছে। ইসলামভাই-এর সাপ-সাপান্তর চলছে। শ্যামবাজার বাটার সামনে এসে কিছুক্ষণ দাঁড়ালাম। এই প্রথম আমি মনে হয় ঈশ্বরের শ্মরণাপন্ন হচ্ছি। চোখ বন্ধ করতেই ঠনঠনিয়া কালীমার মুখটা ভেসে উঠলো। মনে মনে বললাম আজ আমি যেখানে যাচ্ছি, আমাকে সেখানে জিততেই হবে। তুমি আমার সঙ্গে থেকো। মায়ের হাসি হাসি মুখটা চোখের সামনে ভেসে এলো।
যেনো মনে হচ্ছে ভেতরে ভেতরে বল পাচ্ছি। কেনো এমন হচ্ছে ? এটাতো হওয়ার কথা নয়। এর আগে বহু সমস্যা সঙ্কুল কাজ আমি করেছি। তখনতো এমন মনে হয় নি। তাহলে আজ কেনো হচ্ছে ? পায়ে পায়ে হাঁটতে শুরু করলাম।
গলি পথ পেরিয়ে সেই বাড়িটার সামনে এসে দাঁড়ালাম। না এখনো সেই রকম আছে। গত দশ বছরে তার কোনো পরিবর্তন হয় নি। হয়তো পলেস্তরা খসিয়ে দেয়ালে নতুন পলেস্তরা পরেছে। সেই দরজা। কড়াদুটোও সেই রকম। আমি আস্তে করে কড়া নারলাম। একবার দুবার তিনবার। দরজা খুলে গেলো।
বছর পাঁচেকের একটা ছেলে। এক মাথা ভর্তি চুল। কি মিষ্টি দেখতে।
তুমি কাকে খুঁজছো।
আমি ওকে এক দৃষ্টে দেখে যাচ্ছি।
বলোনা আংকেল তুমি কাকে খুঁজছো।
কি বলবো এই দুধের শিশুকে। আমি কিসের টানে এই বাড়িতে এই সাত সকালে ছুটে এসেছি।
কেরে পিকু কার সঙ্গে কথা বলছিস।
ভেতর থেকে একটা শব্দ ভেসে এলো। দশবছর আগে এই গলার স্বর শুনেছি। মেলাবার চেষ্টা করলাম। সেই কিনা।
একটা আংকেল এসেছে। কথা বলছে না। বোবা।
হেসেফেললাম।
আবার হাসছে দেখো না।
মুখ বাড়িয়ে ভেতরে তাকালাম না কারুর দেখা নেই। আমি পকেট থেকে একটা ক্যান্ডি বার করলাম। পিকুর চোখের সামনে রাখলাম।
আমি খাই না। দাঁতে পোকা হবে।
হাসলাম। মনে মনে বললাম কি পাকা পাকা কথা রে বাবা।
নাও না এটা খেলে পোকা হবে না। সব পোকা মরে যাবে।
মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে বললো, তুমি কথা বলতে পারো।
হাসলাম।
মা বকবে।
বকবে না। আমি মাকে বকে দেবো।
তুমি আমার মাকে চেনো।
হুঁ।
কেরে পিকু।
দরজার সামনে এই মুহূর্তে যে এসে দাঁড়াল তাকে আমি দশ বছর আগে দেখেছি। মুখশ্রীর কোনো পরিবর্তন হয় নি। সিঁথির সিঁদুর বেশ ঝকঝকে। এখুনি স্নান করে উঠে এসেছে, গায়ার রং আগের মতোই। মাজা মাজা। আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে, আমিও তাকিয়ে আছি। চোখের দৃষ্টিতে বিষ্ময়। চেনা চেনা মুখ তবু যেনো অচেনা।
আংকেল তুমি যে বললে মাকে চেনো।
ইসিতা পিকুকে হাত ধরে ভেতরে টেনে নিলো। মুখের রং বদলে গেলো। কঠিন কিছু কথা বলতে গিয়েও থেমে গেলো।
কেনো এসেছিস।
ইসিতা গলার কাঠিন্য তবু লোকাতে পারলো না।
মা তুমি আংকেলকে বকছো কেনো।
থামো, পাকা পাকা কথা বলতে হবে না।
কেগো ইসিতা। ভেতর থেকে পুরুষের কণ্ঠস্বর ভেসে এলো।
ইসিতা আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে। কিছু বোঝার চেষ্টা করছে।
বাইরে দাঁড়িয়েই সব কথা বলবো।
আমি খুব মৃদু স্বরে ইসিতার দিকে তাকিয়ে বললাম।
পেছনে একজন বছর চল্লিশের ভদ্রলোক এসে দাঁড়ালেন। স্টাউট ফিগার। একটা বাটিক প্রিন্টের লুঙ্গি এবং পাঞ্জাবী পরা।
কাকে চান আপনি।
ইসিতা মাথা নীচু করে আস্তে করে বললো, ও অনি।
অনি! তোমাদের সেই অনি।
হ্যাঁ।
আশ্চর্য, ওনাকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছো কেনো, ভেতরে আস্তে দাও।
পিকু আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে।
আসুন আসুন।
ইসিতা সরে দাঁড়ালো, আমি ধীর পায়ে ভেতরে এলাম। নিচের বসার ঘরটা সেরকমই আছে। সেই টেবিল। এখানে কতো স্মৃতি আঁকা হয়ে রয়েছে। আমি চারিদিকে একবার তাকালাম। আজ দশবছর আগেকার স্মৃতি মনে পরে যাচ্ছে। ফাইন্যালের রেজাল্টটা নিয়ে আমি শেষবারের মতো এই বাড়িতে পা রেখেছিলাম। সেদিন মিত্রার তথাকথিত মা আমার সঙ্গে খুব একটা ভালো ব্যবহার করেন নি। তারপর দু’একবার মিত্রার সঙ্গে দেখা হয়েছিলো মাস খানেকের মধ্যে। তারপর আমি হারিয়ে গেলাম।
তুমি কাকে খুঁজছো।
আমি ওকে এক দৃষ্টে দেখে যাচ্ছি।
বলোনা আংকেল তুমি কাকে খুঁজছো।
কি বলবো এই দুধের শিশুকে। আমি কিসের টানে এই বাড়িতে এই সাত সকালে ছুটে এসেছি।
কেরে পিকু কার সঙ্গে কথা বলছিস।
ভেতর থেকে একটা শব্দ ভেসে এলো। দশবছর আগে এই গলার স্বর শুনেছি। মেলাবার চেষ্টা করলাম। সেই কিনা।
একটা আংকেল এসেছে। কথা বলছে না। বোবা।
হেসেফেললাম।
আবার হাসছে দেখো না।
মুখ বাড়িয়ে ভেতরে তাকালাম না কারুর দেখা নেই। আমি পকেট থেকে একটা ক্যান্ডি বার করলাম। পিকুর চোখের সামনে রাখলাম।
আমি খাই না। দাঁতে পোকা হবে।
হাসলাম। মনে মনে বললাম কি পাকা পাকা কথা রে বাবা।
নাও না এটা খেলে পোকা হবে না। সব পোকা মরে যাবে।
মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে বললো, তুমি কথা বলতে পারো।
হাসলাম।
মা বকবে।
বকবে না। আমি মাকে বকে দেবো।
তুমি আমার মাকে চেনো।
হুঁ।
কেরে পিকু।
দরজার সামনে এই মুহূর্তে যে এসে দাঁড়াল তাকে আমি দশ বছর আগে দেখেছি। মুখশ্রীর কোনো পরিবর্তন হয় নি। সিঁথির সিঁদুর বেশ ঝকঝকে। এখুনি স্নান করে উঠে এসেছে, গায়ার রং আগের মতোই। মাজা মাজা। আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে, আমিও তাকিয়ে আছি। চোখের দৃষ্টিতে বিষ্ময়। চেনা চেনা মুখ তবু যেনো অচেনা।
আংকেল তুমি যে বললে মাকে চেনো।
ইসিতা পিকুকে হাত ধরে ভেতরে টেনে নিলো। মুখের রং বদলে গেলো। কঠিন কিছু কথা বলতে গিয়েও থেমে গেলো।
কেনো এসেছিস।
ইসিতা গলার কাঠিন্য তবু লোকাতে পারলো না।
মা তুমি আংকেলকে বকছো কেনো।
থামো, পাকা পাকা কথা বলতে হবে না।
কেগো ইসিতা। ভেতর থেকে পুরুষের কণ্ঠস্বর ভেসে এলো।
ইসিতা আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে। কিছু বোঝার চেষ্টা করছে।
বাইরে দাঁড়িয়েই সব কথা বলবো।
আমি খুব মৃদু স্বরে ইসিতার দিকে তাকিয়ে বললাম।
পেছনে একজন বছর চল্লিশের ভদ্রলোক এসে দাঁড়ালেন। স্টাউট ফিগার। একটা বাটিক প্রিন্টের লুঙ্গি এবং পাঞ্জাবী পরা।
কাকে চান আপনি।
ইসিতা মাথা নীচু করে আস্তে করে বললো, ও অনি।
অনি! তোমাদের সেই অনি।
হ্যাঁ।
আশ্চর্য, ওনাকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছো কেনো, ভেতরে আস্তে দাও।
পিকু আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে।
আসুন আসুন।
ইসিতা সরে দাঁড়ালো, আমি ধীর পায়ে ভেতরে এলাম। নিচের বসার ঘরটা সেরকমই আছে। সেই টেবিল। এখানে কতো স্মৃতি আঁকা হয়ে রয়েছে। আমি চারিদিকে একবার তাকালাম। আজ দশবছর আগেকার স্মৃতি মনে পরে যাচ্ছে। ফাইন্যালের রেজাল্টটা নিয়ে আমি শেষবারের মতো এই বাড়িতে পা রেখেছিলাম। সেদিন মিত্রার তথাকথিত মা আমার সঙ্গে খুব একটা ভালো ব্যবহার করেন নি। তারপর দু’একবার মিত্রার সঙ্গে দেখা হয়েছিলো মাস খানেকের মধ্যে। তারপর আমি হারিয়ে গেলাম।
বসুন।
ইসিতা নিশ্চই আপনার সহধর্মিনী।
হ্যাঁ। আমি বরুন মুখার্জী।
আমি অনি.....।
হ্যাঁ। আপনার গল্প বহু শুনেছি ইসির মুখ থেকে। তাছাড়া আপনি একজন রিনাউন্ড পার্সেন। আপনাকে কলকাতায় একডাকে সকলে চেনে। দাঁড়িয়ে রইলেন কেনো বসুন।
উনি টেবিলের অপর্জিট চেয়ারে বসলেন। আমি একটা চেয়ারে বসলাম। আগেকার দিনের কাঠের চেয়ার। অযত্নে মলিন।
বাড়ি থেকে কখন বেরিয়েছিস। ইসিতা বললো।
গতকাল সন্ধ্যায়।
তার মানে!
হাসলাম।
এতো সকালে কোথা থেকে আসছিস!
এইতো, ঘুরতে ঘুরতে এসে পরলাম।
সেতো দেখতে পাচ্ছি।
আমি বেশ ভালো করে লক্ষ্য করছি। ভদ্রলোক আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। পরিষ্কার মাপছে।
ব্যাপারটা ঠিক বোধোগম্য হচ্ছে না।
দশবছর সময়টা নেহাত কম নয়। একটু অপেক্ষা কর, বোধো গম্য হবে।
ইসিতা আমার কথায় চমকে উঠলো।
যাও তুমি চা করে নিয়ে এসো। উনি .....।
প্লীজ বরুনদা আমাকে আপনি করে বলবেন না। আমি ইসিতার সমবয়সী।
প্রথম প্রথম হবে না। একটু সময় লাগবে।
পিকুকে দেখতে পেলাম না। ইসিতা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। এই বাড়ির নিচেরটা বসার ঘর। আর গেস্টরুম। ওপরে রান্নাঘর থাকার ঘর। বেশ মনে আছে। ওপরে আমি দুবার উঠেছি। তিনতলায় ওদের পড়ার ঘর।
আপনার লেখা আমি পড়ি।
বরুনদার দিকে তাকালাম।
আপনার, সরি তোমার লেখার হাতটা দারুণ।
হাসলাম।
কাগজে চাকরি করি। যে যেভাবে বলে লিখে দিই।
আপনি চাকরি করেন ?
হ্যাঁ।
তাহলে যে লোকে বলে আপনি ওই কাগজের মালিক!
লোকে বলে। আমি বলি না। আমায় দেখে কি তাই মনে হয় ?
সেটা ঠিক বলেছেন। আপনাকে দেখে কিন্তু সেটা মনে হচ্ছে না।
তাহলে।
আমি অফিসের কাজে প্রায় আপনাদের কাগজের অফিসে যাই।
তাই! কেনো ?
আমাদের কোম্পানীর কাজে।
আপনি কোথায় আছেন।
আইবিএম। আপনাদের কমপিউটার ডিভিসনটা আইবিএমকে মেনটেনান্সের দায়িত্ব দেওয়া আছে।
সফটওয়ার না হার্ডওয়ার।
সফটওয়ার।
তার মানে আপনি সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার।
বরুণদা হাসলেন।
ওটাতে আপনাদের কাগজ।
শুনেছি, একসময় ছিলো। এখন নেই।
কে বললো।
এদের মুখ থেকেই শুনি।
একটু খানি নাড়া চাড়া করেই বুঝতে পারলাম ভদ্রলোক খুব অমায়িক। রাখঢাক নেই।
ইসিতা ট্রেতে করে চায়ের কাপ নিয়ে ঢুকলো।
ইসিতা নিশ্চই আপনার সহধর্মিনী।
হ্যাঁ। আমি বরুন মুখার্জী।
আমি অনি.....।
হ্যাঁ। আপনার গল্প বহু শুনেছি ইসির মুখ থেকে। তাছাড়া আপনি একজন রিনাউন্ড পার্সেন। আপনাকে কলকাতায় একডাকে সকলে চেনে। দাঁড়িয়ে রইলেন কেনো বসুন।
উনি টেবিলের অপর্জিট চেয়ারে বসলেন। আমি একটা চেয়ারে বসলাম। আগেকার দিনের কাঠের চেয়ার। অযত্নে মলিন।
বাড়ি থেকে কখন বেরিয়েছিস। ইসিতা বললো।
গতকাল সন্ধ্যায়।
তার মানে!
হাসলাম।
এতো সকালে কোথা থেকে আসছিস!
এইতো, ঘুরতে ঘুরতে এসে পরলাম।
সেতো দেখতে পাচ্ছি।
আমি বেশ ভালো করে লক্ষ্য করছি। ভদ্রলোক আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। পরিষ্কার মাপছে।
ব্যাপারটা ঠিক বোধোগম্য হচ্ছে না।
দশবছর সময়টা নেহাত কম নয়। একটু অপেক্ষা কর, বোধো গম্য হবে।
ইসিতা আমার কথায় চমকে উঠলো।
যাও তুমি চা করে নিয়ে এসো। উনি .....।
প্লীজ বরুনদা আমাকে আপনি করে বলবেন না। আমি ইসিতার সমবয়সী।
প্রথম প্রথম হবে না। একটু সময় লাগবে।
পিকুকে দেখতে পেলাম না। ইসিতা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। এই বাড়ির নিচেরটা বসার ঘর। আর গেস্টরুম। ওপরে রান্নাঘর থাকার ঘর। বেশ মনে আছে। ওপরে আমি দুবার উঠেছি। তিনতলায় ওদের পড়ার ঘর।
আপনার লেখা আমি পড়ি।
বরুনদার দিকে তাকালাম।
আপনার, সরি তোমার লেখার হাতটা দারুণ।
হাসলাম।
কাগজে চাকরি করি। যে যেভাবে বলে লিখে দিই।
আপনি চাকরি করেন ?
হ্যাঁ।
তাহলে যে লোকে বলে আপনি ওই কাগজের মালিক!
লোকে বলে। আমি বলি না। আমায় দেখে কি তাই মনে হয় ?
সেটা ঠিক বলেছেন। আপনাকে দেখে কিন্তু সেটা মনে হচ্ছে না।
তাহলে।
আমি অফিসের কাজে প্রায় আপনাদের কাগজের অফিসে যাই।
তাই! কেনো ?
আমাদের কোম্পানীর কাজে।
আপনি কোথায় আছেন।
আইবিএম। আপনাদের কমপিউটার ডিভিসনটা আইবিএমকে মেনটেনান্সের দায়িত্ব দেওয়া আছে।
সফটওয়ার না হার্ডওয়ার।
সফটওয়ার।
তার মানে আপনি সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার।
বরুণদা হাসলেন।
ওটাতে আপনাদের কাগজ।
শুনেছি, একসময় ছিলো। এখন নেই।
কে বললো।
এদের মুখ থেকেই শুনি।
একটু খানি নাড়া চাড়া করেই বুঝতে পারলাম ভদ্রলোক খুব অমায়িক। রাখঢাক নেই।
ইসিতা ট্রেতে করে চায়ের কাপ নিয়ে ঢুকলো।
আমার মুখের দিকে তাকিয়ে।
ইসিতা সকালে ঠনঠনিয়াতে গেছিলাম। প্রসাদ আছে। জ্যেঠিমনিকে দিয়ে আয়। পিকুকে দেখতে পাচ্ছি না।
ইসিতা আমার দিকে তাকিয়ে। বুদ্ধিমতী মেয়ে। বোঝার চেষ্টা করছে অনি কি ভাবে অন্দরমহলে প্রবেশ করতে চাইছে। আমি ওর চোখ দেখে বুঝতে পারছি। ও কিছুতেই আমাকে অন্দরমহলে প্রবেশ করতে দেবে না। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম অনি তুই যখন একবার গেট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতে পেরেছিস। তোকে জিততেই হবে। যে করেই হোক। কারুর বাধা তুই শুনবি না।
মা পূজো না করে কিছু খান না।
জানি। এটা কিন্তু পূজোরই প্রসাদ।
ইসিতা একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসলো।
নাও চা খাও। বরুণদা বললো।
হ্যাঁ নিচ্ছি।
একটা কাপ এগিয়ে নিলাম। চায়ে চুমুক দিলাম।
প্রশ্ন করলি না এতোবছর পরে হঠাৎ কেনো এতো সকালে এসে উপস্থিত হলাম।
ইসিতা আমার চোখে চোখ রেখেছে। শেয়ানে শেয়ানে কোলাকুলি।
বিয়ে করেছিস তাই নেমন্তন্ন করতে এসেছিস। ইসিতা টেরা টেরা কথা বলা শুরু করলো।
বৌভাতের দিন কেউ নেমন্তন্ন করতে আসে।
তোর আজকে বৌভাত!
কেনো তুই জানতিস না।
বরুণদার দিকে তাকালাম।
দাদা ইসিতার সামনে আপনি একটা সত্যি কথা বলবেন।
বলো।
আমি অনি। এই নামটা আপনি শুনেছেন। হয়তো আমার সম্বন্ধে অনেক গল্পও আপনি ইসিতার মুখ থেকে শুনে থাকবেন। এটা কি আপনি শোনেন নি আমি পর্শুদিন বিয়ে করেছি, ইসিতার আর এক বোন মিত্রাকে ? আর আজ আমার বৌভাত।
বরুণদা মাথা নীচু করে চুপ করে বসে রইলেন।
ও কিছু জানে না।
ইসি বরুণদার থেকেও তুই আমাকে ভালো করে চিনিস। কেনো আমি এসেছি এই সাত সকালে, নতুন করে বলতে হবে।
আমাদের সঙ্গে মিত্রার কোনো সম্পর্ক নেই।
সেটা আমি জেনেছি পর্শুরাতে। কেনো নেই সেটাও জেনেছি।
ইসিতা চুপ করে রয়েছে। চায়ে চুমুক দিলো।
আমি মিত্রাকে বিয়ে করছি এটা জানলি কি করে ?
আমি চায়ে চুমুক দিলাম। নিস্তব্ধ ঘর। পিন পরলে শব্দ হবে। বরুণদা আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। চোখের পলক পরছে না।
তোকে বলতে হবে না। আমি বলছি।
ইসিতা আমার দিকে মুখ তুলে তাকালো। চোখ দুটো জিঘাংসায় পরিপূর্ণ। পারলে আমাকে এখুন ছিঁড়ে খাবে যেনো।
ইসিতা সকালে ঠনঠনিয়াতে গেছিলাম। প্রসাদ আছে। জ্যেঠিমনিকে দিয়ে আয়। পিকুকে দেখতে পাচ্ছি না।
ইসিতা আমার দিকে তাকিয়ে। বুদ্ধিমতী মেয়ে। বোঝার চেষ্টা করছে অনি কি ভাবে অন্দরমহলে প্রবেশ করতে চাইছে। আমি ওর চোখ দেখে বুঝতে পারছি। ও কিছুতেই আমাকে অন্দরমহলে প্রবেশ করতে দেবে না। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম অনি তুই যখন একবার গেট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতে পেরেছিস। তোকে জিততেই হবে। যে করেই হোক। কারুর বাধা তুই শুনবি না।
মা পূজো না করে কিছু খান না।
জানি। এটা কিন্তু পূজোরই প্রসাদ।
ইসিতা একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসলো।
নাও চা খাও। বরুণদা বললো।
হ্যাঁ নিচ্ছি।
একটা কাপ এগিয়ে নিলাম। চায়ে চুমুক দিলাম।
প্রশ্ন করলি না এতোবছর পরে হঠাৎ কেনো এতো সকালে এসে উপস্থিত হলাম।
ইসিতা আমার চোখে চোখ রেখেছে। শেয়ানে শেয়ানে কোলাকুলি।
বিয়ে করেছিস তাই নেমন্তন্ন করতে এসেছিস। ইসিতা টেরা টেরা কথা বলা শুরু করলো।
বৌভাতের দিন কেউ নেমন্তন্ন করতে আসে।
তোর আজকে বৌভাত!
কেনো তুই জানতিস না।
বরুণদার দিকে তাকালাম।
দাদা ইসিতার সামনে আপনি একটা সত্যি কথা বলবেন।
বলো।
আমি অনি। এই নামটা আপনি শুনেছেন। হয়তো আমার সম্বন্ধে অনেক গল্পও আপনি ইসিতার মুখ থেকে শুনে থাকবেন। এটা কি আপনি শোনেন নি আমি পর্শুদিন বিয়ে করেছি, ইসিতার আর এক বোন মিত্রাকে ? আর আজ আমার বৌভাত।
বরুণদা মাথা নীচু করে চুপ করে বসে রইলেন।
ও কিছু জানে না।
ইসি বরুণদার থেকেও তুই আমাকে ভালো করে চিনিস। কেনো আমি এসেছি এই সাত সকালে, নতুন করে বলতে হবে।
আমাদের সঙ্গে মিত্রার কোনো সম্পর্ক নেই।
সেটা আমি জেনেছি পর্শুরাতে। কেনো নেই সেটাও জেনেছি।
ইসিতা চুপ করে রয়েছে। চায়ে চুমুক দিলো।
আমি মিত্রাকে বিয়ে করছি এটা জানলি কি করে ?
আমি চায়ে চুমুক দিলাম। নিস্তব্ধ ঘর। পিন পরলে শব্দ হবে। বরুণদা আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। চোখের পলক পরছে না।
তোকে বলতে হবে না। আমি বলছি।
ইসিতা আমার দিকে মুখ তুলে তাকালো। চোখ দুটো জিঘাংসায় পরিপূর্ণ। পারলে আমাকে এখুন ছিঁড়ে খাবে যেনো।
বুড়ীমাসি এসে বলেছে।
বুড়ীমাসি এ বাড়িতে আসে না।
বরুণদা মুখ নামিয়ে নিলো।
আমি কিন্তু এ বাড়িতে এসেছি তোদের নিয়ে যেতে।
তা কোনোদিন হবে না।
হবে। আমি এই কাজ করবোই।
আমার গলার স্বরে ঘরটা গম গম করে উঠলো।
তুই কি বলতে চাস।
আমি এই পরিবারের আত্মীয়। বরুণদার মতো আমিও এই বাড়ির জামাই। সেই দৃষ্টিকোন থেকে আমার কিছু ডিমান্ড আছে। আমি আমার সেই ডিমান্ড জানাতে এসেছি।
জানাতে এসেছিস জানালি, এবার চলে যা।
আমি চলে যেতে আসি নি ইসি।
ইসির চোখে প্রতিহিংসা।
কাল সারাটা রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি। ছটফট করেছি। জ্যেঠিমনির সঙ্গে আমাকে দেখা করতেই হবে।
করুণা দেখাতে এসেছিস। বেরো এখান থেকে।
ইসিতা জ্বলে উঠলো।
বরুণদা উঠে দাঁড়ালো।
এ কি বলছো ইসি। অনি আমাদের....।
রাখো। আজ আট বছর কোথায় ছিলো অনি। কে খোঁজ খবর নিয়েছে, আমরা কেমন আছি।
ইসিতা রাগে কাঁপছে।
তুই এখুনি আমাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবি।
আমি যাবো না ইসি। তুই আমাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বার করে দিলেও আমি যাবো না। আজ থেকে দশবছর আগে আমি যেটা মুখ বুঁজে মেনে নিয়েছি। আজ আমি কিছুতেই সেটা মানবো না।
তুই মানিস কি না মানিস তোর ব্যাপার, তুই এখন বেরিয়ে যা।
ইসিতা উঠে দাঁড়ালো। ছুটে এসে আমার হাত ধরলো।
এই ইসি, এ তুমি কি করছো! তুমি অনির হাত ছাড়ো, বোসো।
এখুনি ও বেরিয়ে যাবে, আর একমুহূর্ত এই বাড়িতে ওর থাকা হবে না।
ঠিক আছে, ঠিক আছে। তুমি ওপরে চলো। অনি তুমি একটু বোসো।
বরুণদা ইসিতাকে ধরে ওপরে নিয়ে চলে গেলো।
আমি বসে রইলাম। একা।
কতোক্ষণ বসে আছি জানি না। নানা কথা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। ইসিতা যে ব্যবহারটা আমার সঙ্গে করলো, আমি তাতে একটুও দুঃখ পাই নি। কেনোনা আমি মন থেকে বিশ্বাস করি, আমি যদি ওর জায়গায় থাকতাম তাহলে এর থেকেও খারাপ ব্যবহার করতাম। মিত্রার বাবা ইসিতাদের ফাঁকি দিয়েছে। তার লক্ষ্য চরিতার্থতার জন্য। অতএব বাবার কৃতকর্মের ফল মিত্রাকে ভোগ করতে হতেই পারে।
যতো সময় যাচ্ছে আমার মধ্যে তত জেদ চেপে বসছে। আমাকে যে ভাবেই হোক জ্যেঠিমনিকে নিয়ে যেতে হবে। আমি এই কাজ করবোই।এইটুকু কথা বলে যেটুকু বুঝলাম ইসি কিছু জানে। বরুণদাও জানে না। পারিবারিক এমন কিছু ব্যাপার থাকে যা জামাইদের জানানো যায় না। এমনকি তাদের পরিবারের কেউ জানতেও পারে না। মিত্রা আমাকে যা জানিয়েছে, তা ইসি জানে কিনা আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। মিত্রা তার বাবার দিনলিপি পরে সব জেনেছে। ইসি তা কোনোদিন হাতে পায় নি। এমনকি জ্যেঠিমনি পর্যন্ত মিত্রার বাবার দিনলিপির হদিস জানতেন না। ওদের অনেক কিছুই অজানা। আমার হাতে প্রচুর অস্ত্র। যে কোনো অস্ত্রের বিনিময়ে আমাকে জিততেই হবে।
বুড়ীমাসি এ বাড়িতে আসে না।
বরুণদা মুখ নামিয়ে নিলো।
আমি কিন্তু এ বাড়িতে এসেছি তোদের নিয়ে যেতে।
তা কোনোদিন হবে না।
হবে। আমি এই কাজ করবোই।
আমার গলার স্বরে ঘরটা গম গম করে উঠলো।
তুই কি বলতে চাস।
আমি এই পরিবারের আত্মীয়। বরুণদার মতো আমিও এই বাড়ির জামাই। সেই দৃষ্টিকোন থেকে আমার কিছু ডিমান্ড আছে। আমি আমার সেই ডিমান্ড জানাতে এসেছি।
জানাতে এসেছিস জানালি, এবার চলে যা।
আমি চলে যেতে আসি নি ইসি।
ইসির চোখে প্রতিহিংসা।
কাল সারাটা রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি। ছটফট করেছি। জ্যেঠিমনির সঙ্গে আমাকে দেখা করতেই হবে।
করুণা দেখাতে এসেছিস। বেরো এখান থেকে।
ইসিতা জ্বলে উঠলো।
বরুণদা উঠে দাঁড়ালো।
এ কি বলছো ইসি। অনি আমাদের....।
রাখো। আজ আট বছর কোথায় ছিলো অনি। কে খোঁজ খবর নিয়েছে, আমরা কেমন আছি।
ইসিতা রাগে কাঁপছে।
তুই এখুনি আমাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবি।
আমি যাবো না ইসি। তুই আমাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বার করে দিলেও আমি যাবো না। আজ থেকে দশবছর আগে আমি যেটা মুখ বুঁজে মেনে নিয়েছি। আজ আমি কিছুতেই সেটা মানবো না।
তুই মানিস কি না মানিস তোর ব্যাপার, তুই এখন বেরিয়ে যা।
ইসিতা উঠে দাঁড়ালো। ছুটে এসে আমার হাত ধরলো।
এই ইসি, এ তুমি কি করছো! তুমি অনির হাত ছাড়ো, বোসো।
এখুনি ও বেরিয়ে যাবে, আর একমুহূর্ত এই বাড়িতে ওর থাকা হবে না।
ঠিক আছে, ঠিক আছে। তুমি ওপরে চলো। অনি তুমি একটু বোসো।
বরুণদা ইসিতাকে ধরে ওপরে নিয়ে চলে গেলো।
আমি বসে রইলাম। একা।
কতোক্ষণ বসে আছি জানি না। নানা কথা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। ইসিতা যে ব্যবহারটা আমার সঙ্গে করলো, আমি তাতে একটুও দুঃখ পাই নি। কেনোনা আমি মন থেকে বিশ্বাস করি, আমি যদি ওর জায়গায় থাকতাম তাহলে এর থেকেও খারাপ ব্যবহার করতাম। মিত্রার বাবা ইসিতাদের ফাঁকি দিয়েছে। তার লক্ষ্য চরিতার্থতার জন্য। অতএব বাবার কৃতকর্মের ফল মিত্রাকে ভোগ করতে হতেই পারে।
যতো সময় যাচ্ছে আমার মধ্যে তত জেদ চেপে বসছে। আমাকে যে ভাবেই হোক জ্যেঠিমনিকে নিয়ে যেতে হবে। আমি এই কাজ করবোই।এইটুকু কথা বলে যেটুকু বুঝলাম ইসি কিছু জানে। বরুণদাও জানে না। পারিবারিক এমন কিছু ব্যাপার থাকে যা জামাইদের জানানো যায় না। এমনকি তাদের পরিবারের কেউ জানতেও পারে না। মিত্রা আমাকে যা জানিয়েছে, তা ইসি জানে কিনা আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। মিত্রা তার বাবার দিনলিপি পরে সব জেনেছে। ইসি তা কোনোদিন হাতে পায় নি। এমনকি জ্যেঠিমনি পর্যন্ত মিত্রার বাবার দিনলিপির হদিস জানতেন না। ওদের অনেক কিছুই অজানা। আমার হাতে প্রচুর অস্ত্র। যে কোনো অস্ত্রের বিনিময়ে আমাকে জিততেই হবে।
অনি।
বরুণদার ডাকে মুখ তুলে তাকালাম।
দরজার সামনে যিনি দাঁড়িয়ে তাঁকে আমি আজ থেকে দশ বছর আগে দেখেছি। সেই পাকা গমের মতো গায়ের রং এখনো অটুট। সেই বুদ্ধিদীপ্ত চোখ,টিয়াপাখির ঠোঁটের মতো টিকলো নাক। মাথার চুলে এখোনো সেইভাবে পাক ধরে নি। দু’একটা রূপালি তার এদিক সেদিক উঁকি ঝুঁকি মারছে। সাদা ধবধবে কালো পাড় শাড়ি পরা। গালদুটো সামান্য ভেঙেছে। আমি এগিয়ে গিয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম।
থাক বাবা থাক।
আমায় চিনতে পেরেছো জ্যেঠিমনি ?
ইসি না বললে পারতাম না। বয়স হয়েছে, চোখের জ্যোতি কেমেছে।
তুমি কেমন আছো।
ভালো।
আমি মিত্রাকে বিয়ে করেছি।
ইসি বললো।
আমি জ্যেঠিমনির চোখের দিকে তাকিয়ে আছি। বুঝতে পারলাম জ্যেঠিমনি সত্যি বলছে না। উত্তেজনা হীন চোখ। পোর খাওয়া মানুষ। আমি হাত ধরে ভেতরে নিয়ে এলাম। চেয়ারটা এগিয়ে দিলাম। জ্যেঠিমনি বসলো।
তোমরা কথা বলো। আমি একটু চা নিয়ে আসি।
বুঝলাম বরুণদা আমাকে কথা বলার সুযোগ দিয়ে গেলেন।
তুমি কিছু খাবে বাবা।
না। তোমার জন্য পূজোর প্রসাদ নিয়ে এসেছিলাম, খাবে ?
জ্যেঠিমনি আমার দিকে তাকালো। অনেক না বলা কথা এই চোখে।
রাখো, পরে খাচ্ছি।
বরুণদা বেরিয়ে গেলো।
পিকু কোথায়।
ওর কথা আর বোলো না। ওপরে দুষ্টুমি করছে।
আমার আজ বৌভাত, তোমাকে নিয়েযেতে এসেছি।
জ্যেঠিমনি আমার দিকে তাকালো। এ চোখে অনেক জিজ্ঞাসা।
আমি কোথাও বেরোই না বাবা।
আজ বেরোবে, শুধু মাত্র আমার জন্য বেরোবে। মাত্র দশমিনিটের জন্য আমার সঙ্গে যাবে। আমি তোমায় আবার পৌঁছে দিয়ে যাবো।
না বাবা থাক, আর একদিন যাবো।
ইশিতা বরুণদা ঘরে ঢুকলো। মিষ্টিরপ্লেট এবং চা হাতে। ইশিতা মুখ নীচু করে আছে। বুঝলাম ওপরে গিয়ে খুব কান্নাকাটি করেছে। মুহূর্তের উত্তেজনা। তার রেশ ওর চোখের পাতায়।
আমি তাকালাম না।
আমি কিছু খাবো না ইসি, খালি চা খাবো।
কেনো বাবা, তুমি আজ প্রথম আমাদের বাড়িতে এলে।
আজ প্রথম নয় জ্যেঠিমনি, এর আগেও বহুবার এসেছি। তোমার হাতের তৈরি বাটি চড়চড়ি লুচি খেয়ে গেছি।
সেতো বহুকাল আগে।
আজতো আমি এবাড়িতে নতুন নয়।
তুমি নতুন জামাই বলে কথা।
এটাতো তুমি স্বীকার করে নিচ্ছ না জ্যেঠিমনি। ইসিও তা মানতে চাইছে না। যদি তাই হতো আমার সঙ্গে একবার যেতে।
না বাবা তা হয় না।
কেনো হয় না জ্যেঠিমনি, আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না।
সে তুই জানিস না। তোকে তো বলেছি আমাদের সঙ্গে ওর কোনো সম্পর্ক নেই। ইসিতা খুব নীচু স্বরে বললো।
আমি ইসিতার দিকে তাকালাম। পায়ে পায়ে এগিয়ে এলাম। ওর চোখে চোখ রাখলাম।
আমার ওপর তুই রাগ করতে পারিস, অভিমান করতে পারিস। আমি হয়তো তোকে অনেক ছোটবড়ো কথা বলে ফেলেছি। কিন্তু তুই তোর বনের ওপর রাগ করতে পারিস না।
কে বলেছে ও আমার বোন। একটা নোংরা মেয়ে। বাজারের.......। ইসি দপ করে জ্বলে উঠলো।
আমি ততধিক নরম খুব আস্তে ধীরে বললাম।
ঠিক বলেছিস। এটা ওর প্রাপ্য।
ইসি।
জ্যেঠিমনির গলার কঠিন স্বরে ঘরটা গম গম করে উঠলো।
তোমার মুখ থেকে ওর সম্বন্ধে আর কোনো কথা যেনো না শুনি।
মা! তুমিই তো.......।
জ্যেঠিমনির স্থির চোখে শাসনের ছোঁয়া।
ইসি চুপ করে গেলো।
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে।
নাও বাবা খাও। সকাল থেকে কিছু খাওনিতো।
জ্যেঠিমনির গলা থেকে স্নেহ ঝরে পরছে।
বরুণদার ডাকে মুখ তুলে তাকালাম।
দরজার সামনে যিনি দাঁড়িয়ে তাঁকে আমি আজ থেকে দশ বছর আগে দেখেছি। সেই পাকা গমের মতো গায়ের রং এখনো অটুট। সেই বুদ্ধিদীপ্ত চোখ,টিয়াপাখির ঠোঁটের মতো টিকলো নাক। মাথার চুলে এখোনো সেইভাবে পাক ধরে নি। দু’একটা রূপালি তার এদিক সেদিক উঁকি ঝুঁকি মারছে। সাদা ধবধবে কালো পাড় শাড়ি পরা। গালদুটো সামান্য ভেঙেছে। আমি এগিয়ে গিয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম।
থাক বাবা থাক।
আমায় চিনতে পেরেছো জ্যেঠিমনি ?
ইসি না বললে পারতাম না। বয়স হয়েছে, চোখের জ্যোতি কেমেছে।
তুমি কেমন আছো।
ভালো।
আমি মিত্রাকে বিয়ে করেছি।
ইসি বললো।
আমি জ্যেঠিমনির চোখের দিকে তাকিয়ে আছি। বুঝতে পারলাম জ্যেঠিমনি সত্যি বলছে না। উত্তেজনা হীন চোখ। পোর খাওয়া মানুষ। আমি হাত ধরে ভেতরে নিয়ে এলাম। চেয়ারটা এগিয়ে দিলাম। জ্যেঠিমনি বসলো।
তোমরা কথা বলো। আমি একটু চা নিয়ে আসি।
বুঝলাম বরুণদা আমাকে কথা বলার সুযোগ দিয়ে গেলেন।
তুমি কিছু খাবে বাবা।
না। তোমার জন্য পূজোর প্রসাদ নিয়ে এসেছিলাম, খাবে ?
জ্যেঠিমনি আমার দিকে তাকালো। অনেক না বলা কথা এই চোখে।
রাখো, পরে খাচ্ছি।
বরুণদা বেরিয়ে গেলো।
পিকু কোথায়।
ওর কথা আর বোলো না। ওপরে দুষ্টুমি করছে।
আমার আজ বৌভাত, তোমাকে নিয়েযেতে এসেছি।
জ্যেঠিমনি আমার দিকে তাকালো। এ চোখে অনেক জিজ্ঞাসা।
আমি কোথাও বেরোই না বাবা।
আজ বেরোবে, শুধু মাত্র আমার জন্য বেরোবে। মাত্র দশমিনিটের জন্য আমার সঙ্গে যাবে। আমি তোমায় আবার পৌঁছে দিয়ে যাবো।
না বাবা থাক, আর একদিন যাবো।
ইশিতা বরুণদা ঘরে ঢুকলো। মিষ্টিরপ্লেট এবং চা হাতে। ইশিতা মুখ নীচু করে আছে। বুঝলাম ওপরে গিয়ে খুব কান্নাকাটি করেছে। মুহূর্তের উত্তেজনা। তার রেশ ওর চোখের পাতায়।
আমি তাকালাম না।
আমি কিছু খাবো না ইসি, খালি চা খাবো।
কেনো বাবা, তুমি আজ প্রথম আমাদের বাড়িতে এলে।
আজ প্রথম নয় জ্যেঠিমনি, এর আগেও বহুবার এসেছি। তোমার হাতের তৈরি বাটি চড়চড়ি লুচি খেয়ে গেছি।
সেতো বহুকাল আগে।
আজতো আমি এবাড়িতে নতুন নয়।
তুমি নতুন জামাই বলে কথা।
এটাতো তুমি স্বীকার করে নিচ্ছ না জ্যেঠিমনি। ইসিও তা মানতে চাইছে না। যদি তাই হতো আমার সঙ্গে একবার যেতে।
না বাবা তা হয় না।
কেনো হয় না জ্যেঠিমনি, আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না।
সে তুই জানিস না। তোকে তো বলেছি আমাদের সঙ্গে ওর কোনো সম্পর্ক নেই। ইসিতা খুব নীচু স্বরে বললো।
আমি ইসিতার দিকে তাকালাম। পায়ে পায়ে এগিয়ে এলাম। ওর চোখে চোখ রাখলাম।
আমার ওপর তুই রাগ করতে পারিস, অভিমান করতে পারিস। আমি হয়তো তোকে অনেক ছোটবড়ো কথা বলে ফেলেছি। কিন্তু তুই তোর বনের ওপর রাগ করতে পারিস না।
কে বলেছে ও আমার বোন। একটা নোংরা মেয়ে। বাজারের.......। ইসি দপ করে জ্বলে উঠলো।
আমি ততধিক নরম খুব আস্তে ধীরে বললাম।
ঠিক বলেছিস। এটা ওর প্রাপ্য।
ইসি।
জ্যেঠিমনির গলার কঠিন স্বরে ঘরটা গম গম করে উঠলো।
তোমার মুখ থেকে ওর সম্বন্ধে আর কোনো কথা যেনো না শুনি।
মা! তুমিই তো.......।
জ্যেঠিমনির স্থির চোখে শাসনের ছোঁয়া।
ইসি চুপ করে গেলো।
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে।
নাও বাবা খাও। সকাল থেকে কিছু খাওনিতো।
জ্যেঠিমনির গলা থেকে স্নেহ ঝরে পরছে।
না জ্যেঠিমনি, আমি চা ছাড়া কিছু খাবো না।
কেনো।
খেতে আমি পারি জ্যেঠিমনি একটা সর্তে।
জ্যেঠিমনি আমার চোখের দিকে তাকালো। বোঝার চেষ্টা করলো আমি কি বলতে চাই।
আমাকে তোমার ঘরে একবার নিয়ে যেতে হবে।
সে যাবে খোন। এটা আবার বলতে হয় নাকি।
তাহলে চলো। তোমার ঘরে যাই। তারপর নিচে নেমে এসে নতুন জামাই হিসেবে মিষ্টি মুখ করে আমি বেরিয়ে যাবো। অনি তোমাদের সামনে আর কোনোদিন আসবে না।
ঠিক আছে তুমি চাটা খাও।
এখন খাবো না। ওই যে বললাম তোমায়।
ইসিতা আমার দিকে তাকিয়ে।
ইসি আমি যদি জ্যেঠিমনিকে নিয়ে কিছুক্ষণ ওপরে সময় কাটাই তোমাদের আপত্তি আছে।
এমা ওদের আপত্তি থাকবে কেনো। তুমিতো আমার ঘরে যাবে।
হয়তো থাকতে পারে। যদি থাকে তাহলে যাবো না। আমি এখান থেকেই চলে যাবো।
এই দেখো পাগল ছেলের কান্ড দেখো। ঠিক আছে তুমি চলো আমার সঙ্গে।
ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম। বরুণদা ইসি নিশ্চল ভাবে দাঁড়িয়ে। আমি জ্যেঠিমনির পেছন পেছন ওপরে উঠে এলাম। ইসি আমার দিকে একবার ড্যাব ড্যাব করে তাকালো। বুঝতে পারছি, ওর চোখের আগুন আমাকে পুরিয়ে মারবে। দশ বছর আগের স্মৃতিটাকে একবার ঝালিয়ে নেবার চেষ্টা করলাম। জ্যেঠিমনির ঘরে তিনটে ছবি আছে একটা মিত্রা আর ইসির বছর দশেক বয়সের একটা ছবি। আর একটা ইসির বাবার আর একটা মিত্রার বাবার। এই তিনটে ছবি ছাড়া দু’একটা ক্যালেন্ডার, আর ঠাকুর দেবতার ছবি। এছাড়া আছে একটা পুরোনো দিনের খাট দুটো কাঠের আলমাড়ি।
আমি পায়ে পায়ে জ্যেঠিমনির ঘরে এসে ঢুকলাম। অবাক হয়ে গেলাম। দশ বছর আগে যেখানে যে ভাবে দেখেগেছি ঠিক সেই ভাবেই আছে। সব কিছুই মলিন। ঝকঝকে তকতকে নয়। সেই ইজিচেয়ার। আমার ঘরে যেরকম একটা আছে। আমি চারিদিক একবার ভালো করে লক্ষ্য করলাম। আমার মুখ থেকে কোনো কথা সড়ছে না। আমি মিত্রা আর ইসির ছবিটার কাছে এলাম। ফ্রক পরে দু’বোন ছাদে দাঁড়িয়ে। দু’জনেরই মুখ অনেক ভেঙেচুড়ে গেছে। কিন্তু আদলটা এখনো সেই রকম। শুনেছি ইসির থেকে মিত্রার বয়সের ডিফারেন্স বেশি নয়। পিঠো পিঠি।
বোসো।
ফটোর সামনে থেকে ঘুরে দাঁড়ালাম। কোথা থেকে শুরু করবো। মনে মনে ঠিক করার চেষ্টা করলাম। মনকে বোঝালাম অনি তোর এটা শেষ সুযোগ। তুই এখন একা জ্যেঠিমনির সামনে। তোকে বোঝাতেই হবে কেনো তুই এখানে ছুটে এসেছিস, কেনো তুই আজই জ্যেঠিমনিকে নিয়ে যেতে চাস। তোকে জ্যেঠিমনির দুর্বল জায়গাটায় দারুণ ভাবে আঘাত করতে হবে। অনেক দিনের জমানো আক্রোশ তোকে একধাক্কায় টুকরো টুকরো করে ভেঙে দিতে হবে। তবেই তুই জিতবি। এবরা তোর খেলা। তুইতো এই খালায় দারুণ পটু।
জ্যেঠিমনি।
জ্যেঠিমনি আমার মুখের দিকে তাকালেন।
আমি আবার ছবিটার দিকে ঘুরলাম।
আচ্ছা। এই ছবিদুটো (মিত্রার বাবার ছবিটারও উল্লেখ করলাম) তুমি আজও টাঙিয়ে রেখেছো কেনো।
আছে, থাক। জ্যেঠিমনি খুব আস্তে কথা বললেন।
কেনো থাকবে। এদের সঙ্গে তোমাদের সম্পর্ক নেই যেখানে।
কে নামাবে বলো। লোকের অভাব।
আমি নামিয়ে দিই।
কেনো।
খেতে আমি পারি জ্যেঠিমনি একটা সর্তে।
জ্যেঠিমনি আমার চোখের দিকে তাকালো। বোঝার চেষ্টা করলো আমি কি বলতে চাই।
আমাকে তোমার ঘরে একবার নিয়ে যেতে হবে।
সে যাবে খোন। এটা আবার বলতে হয় নাকি।
তাহলে চলো। তোমার ঘরে যাই। তারপর নিচে নেমে এসে নতুন জামাই হিসেবে মিষ্টি মুখ করে আমি বেরিয়ে যাবো। অনি তোমাদের সামনে আর কোনোদিন আসবে না।
ঠিক আছে তুমি চাটা খাও।
এখন খাবো না। ওই যে বললাম তোমায়।
ইসিতা আমার দিকে তাকিয়ে।
ইসি আমি যদি জ্যেঠিমনিকে নিয়ে কিছুক্ষণ ওপরে সময় কাটাই তোমাদের আপত্তি আছে।
এমা ওদের আপত্তি থাকবে কেনো। তুমিতো আমার ঘরে যাবে।
হয়তো থাকতে পারে। যদি থাকে তাহলে যাবো না। আমি এখান থেকেই চলে যাবো।
এই দেখো পাগল ছেলের কান্ড দেখো। ঠিক আছে তুমি চলো আমার সঙ্গে।
ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম। বরুণদা ইসি নিশ্চল ভাবে দাঁড়িয়ে। আমি জ্যেঠিমনির পেছন পেছন ওপরে উঠে এলাম। ইসি আমার দিকে একবার ড্যাব ড্যাব করে তাকালো। বুঝতে পারছি, ওর চোখের আগুন আমাকে পুরিয়ে মারবে। দশ বছর আগের স্মৃতিটাকে একবার ঝালিয়ে নেবার চেষ্টা করলাম। জ্যেঠিমনির ঘরে তিনটে ছবি আছে একটা মিত্রা আর ইসির বছর দশেক বয়সের একটা ছবি। আর একটা ইসির বাবার আর একটা মিত্রার বাবার। এই তিনটে ছবি ছাড়া দু’একটা ক্যালেন্ডার, আর ঠাকুর দেবতার ছবি। এছাড়া আছে একটা পুরোনো দিনের খাট দুটো কাঠের আলমাড়ি।
আমি পায়ে পায়ে জ্যেঠিমনির ঘরে এসে ঢুকলাম। অবাক হয়ে গেলাম। দশ বছর আগে যেখানে যে ভাবে দেখেগেছি ঠিক সেই ভাবেই আছে। সব কিছুই মলিন। ঝকঝকে তকতকে নয়। সেই ইজিচেয়ার। আমার ঘরে যেরকম একটা আছে। আমি চারিদিক একবার ভালো করে লক্ষ্য করলাম। আমার মুখ থেকে কোনো কথা সড়ছে না। আমি মিত্রা আর ইসির ছবিটার কাছে এলাম। ফ্রক পরে দু’বোন ছাদে দাঁড়িয়ে। দু’জনেরই মুখ অনেক ভেঙেচুড়ে গেছে। কিন্তু আদলটা এখনো সেই রকম। শুনেছি ইসির থেকে মিত্রার বয়সের ডিফারেন্স বেশি নয়। পিঠো পিঠি।
বোসো।
ফটোর সামনে থেকে ঘুরে দাঁড়ালাম। কোথা থেকে শুরু করবো। মনে মনে ঠিক করার চেষ্টা করলাম। মনকে বোঝালাম অনি তোর এটা শেষ সুযোগ। তুই এখন একা জ্যেঠিমনির সামনে। তোকে বোঝাতেই হবে কেনো তুই এখানে ছুটে এসেছিস, কেনো তুই আজই জ্যেঠিমনিকে নিয়ে যেতে চাস। তোকে জ্যেঠিমনির দুর্বল জায়গাটায় দারুণ ভাবে আঘাত করতে হবে। অনেক দিনের জমানো আক্রোশ তোকে একধাক্কায় টুকরো টুকরো করে ভেঙে দিতে হবে। তবেই তুই জিতবি। এবরা তোর খেলা। তুইতো এই খালায় দারুণ পটু।
জ্যেঠিমনি।
জ্যেঠিমনি আমার মুখের দিকে তাকালেন।
আমি আবার ছবিটার দিকে ঘুরলাম।
আচ্ছা। এই ছবিদুটো (মিত্রার বাবার ছবিটারও উল্লেখ করলাম) তুমি আজও টাঙিয়ে রেখেছো কেনো।
আছে, থাক। জ্যেঠিমনি খুব আস্তে কথা বললেন।
কেনো থাকবে। এদের সঙ্গে তোমাদের সম্পর্ক নেই যেখানে।
কে নামাবে বলো। লোকের অভাব।
আমি নামিয়ে দিই।